সাবধান! মশার কয়েলে মারাত্মক বিপদ। হাতের কাছেই প্রাকৃতিক সমাধান

মশা আতঙ্ক গ্রাস করেছে আমাদের। ক্ষুদ্র এই প্রাণীর কামড় যে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে প্রতিদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা তা জানান দিচ্ছে। শুধু ডেঙ্গিই নয় ম্যালেরিয়া জ্বরেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।অনেক ক্ষেত্রেই তা প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলে মশার কামড় থেকে বাঁচতে ঘরে ঘরে কয়েলের ব্যবহার বেড়েছে অনেক। আর এতেই ঘনাচ্ছে আরও এক বিপদ।

মশার কামড়ে রোগগুলি সম্পর্কে ধারণা থাকলেও মশার কয়েল থেকে কী ক্ষতি হতে পারে সেই সম্পর্কে ধারণা আমাদের কম। ফলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হচ্ছে শরীরের । তাই জেনে নিন মশার কয়েলের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, মশার কয়েলে যে পরিমান রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তা নির্ধারিত মাত্রার থেকে বেশি। একটি মশার কয়েল যে পরিমান ধোঁয়া উৎপন্ন করে, তা ১০০টি সিগারেটের ধোঁয়ার সমান।এর ফলে অনেক রকম স্নায়ু ঘটিত সমস্যা দেখা দিতে পারে । শুধু তাই নয়, মশার কয়েলের মারাত্মক রাসায়নিক উপাদান মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে বলেও মত গবেষকদের।

সাধারণত কয়েলের প্রধান উপাদান হিসাবে থাকে পাইরোফ্রয়েড। এটি প্রাকৃতিক যৌগ পাইরোগ্রাম থেকে পাওয়া যায়। এর আসল সক্রিয় উপাদানটি হল কীটনাশক ডিডিটি বা পিন্ডেনের মতো ক্লোরিনেটেড হাইড্রোকার্বন, প্যারাফিনের মতো আরপ্যান ফসফরাস যৌগ এবং কার্বন।

মশার কয়েলে ব্যবহৃত এই বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়। সেগুলিই আমাদের নাকে ঢোকে। ডঃ অরিন্দম বিশ্বাসের মতে সবথেকে বেশি সমস্যা হয় যাদের অ্যালার্জি , অ্যাস্থমা আছে। কয়েলের রাসায়নিক ধোঁয়ায় চোখে জল, হাঁচি, কাশি সমস্যা হতে পারে। হতে পারে অ্যাস্থমা অ্যাটাকও। কয়েলের রাসায়নিক ধোঁয়ার দীর্ঘমেয়াদি ফলস্বরূপ ফুসফুসের রোগ বা সাইনোসাইটিসের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।এই সমস্যা সব থেকে বেশি হয় সদ্যজাত শিশুদের।তাই যতটা সম্ভব কয়েলের ধোঁয়া থেকে নিজেকে বাঁচান যায় ততই ভালো। তাই একদম কাছে কয়েল না রেখে কিছুটা দূরে রাখা, অনেকক্ষণ ধরে কয়েল জ্বালিয়ে না রাখা – এই বিষয়গুলি মেনে চলা জরুরি।

তাই মশার কয়েলের থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। তাহলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচার উপায়? রইল কিছু প্রাকৃতিক সমাধান।

.  মশা তাড়াতে লেবু ও লবঙ্গ ব্যবহার করা যেতে পারে।  প্রথমে একটি লেবু পাতলা করে কেটে তাতে ৪-৫টি লবঙ্গ দিয়ে ঘরের কোণায় রেখে দিন। এর গন্ধে সব মশা পালিয়ে যাবে।

. দরজা বন্ধ করে করে কর্পুর জ্বালিয়ে রাখলে ৩০ মিনিটের মধ্যে মশা পালাবে। অথবা কর্পূর একবাটি জলে রেখে মশা তাড়াবার জবরদস্ত প্রাকৃতিক সংমিশ্রণও ব্যবহার করতে পারেন।

. রসুনের বেশ কিছু গুণ রয়েছে যা মশাকে তাড়াতে পারে।  রসুনের রস মশার জন্য প্রাণঘাতী,।রসুনের কুঁচি জলে সেদ্ধ করে স্প্রে হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।

তবে সবার আগে দরকার সচেতনতা। কোনওভাবেই জল কোথাও জমতে দেবেন না। জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্ত জরুরি।