সংবাদপত্রেই কী লুকিয়ে করোনা বিপদ? জানাচ্ছেন ভাইরোলজিস্ট ডঃ অমিতাভ নন্দী

করোনা আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বাদ যায়নি ভারতও। দেশ জুড়ে লকডাউন ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। দেশবাসীকে ঘরের বাইরে না বেরোনোর অনুরোধ।সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। এরই মধ্যে সংবাদপত্রকে নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন আতঙ্ক।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে সংবাদপত্র ব্যবহার থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা ভাইরাস। আর এতেই বেড়েছে আতঙ্ক। তবে এটি এখনও পরীক্ষিত সত্য না নয় মত বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট ডঃ অমিতাভ নন্দী।

করোনা ড্রপলেট এবং ক্লোজড কনটাক্টের মাধ্যমেই ছড়ায়। কাগজ, প্লাস্টিক, ধাতব পদার্থের ওপর কোভিড-১৯ বেঁচে থেকে সংক্রামিত করতে পারে কিনা তা এখনও গবেষণাধীন। তাই হাত বারেবারে সাবান দিয়ে পরিস্কার করা, অযথা চোখে, নাকে, মুখে হাত না দেওয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন পরামর্শ বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট ডঃ অমিতাভ নন্দীর। তবে এই খবরের কাগজ থেকে নানান সমস্যা মানব দেহে হতে পারে তাও জানাতে ভোলেননি ডঃ নন্দী। তাই অবশ্যই সবসময় সংবাদপত্র ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত বলেই মনে করেন তিনি। সংবাদপত্র যেভাবে বাড়ি বাড়ি পৌছানো হয়, তা থেকে হতে পারে নানান শারীরিক সমস্যা। সংবাদপত্র বাড়িতে পৌছনোর আগে তা রাস্তায় যেভাবে ফেলে রাখা হয় তাতে নানান জীবাণুর প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে।

রাস্তায় ধুলো, যত্রতত্র ছড়ানো থুথু কফ, সারমেয়ের পটি, এই সমস্ত কিছু অনেক সময় উপেক্ষা করেই রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় বান্ডিল বান্ডিল সংবাদপত্র, আর সেখান থেকে হকাররা তা বেছে নিয়ে পৌছিয়ে দেন আমার আপনার বাড়িতে। বর্ষাকালে বিভিন্ন পয়ঃপ্রণালির জল জমা জলের সঙ্গে মিশে তা আরও ভয়ঙ্কর আকার ধারন করে। কখনও কখনও সেই জমা জলের সংস্পর্শে চলে আসে সংবাদপত্রও। আর সেই জীবাণু ভর্তি সংবাদপত্র হকাররা পোছিয়ে দেন বাড়িতে বাড়িতে।

আরও পড়ুন: গরমে স্নানে থাকুন তরতাজা, পরুন হালকা পোশাক

সেই সংবাদপত্র আপনি নিয়ে বসেন কখনও আপনার ডাইনিং টেবিলে চা জলখাবার খাওযার সময়, কখনও বিছানার ওপর। দিনের শেষে সেই সংবাদপত্রটি পড়ার পর অনেকেই এমন জায়গায় রাখেন যেখান দিয়ে আরশোলা, ইঁদুর, টিকটিকির অবাধ বিচরণ। সেই খবরের কাগজ পুরনো কাগজ বিক্রেতাদের হাত ধরে ঠোঙা বানানোর উপকরণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর বললেন ডঃ অমিতাভ নন্দী।

আলু কিংবা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য যা ভালো করে ধুয়ে সেদ্ধ করে রান্না করে খাওয়া হয় সেই ক্ষেত্রে যাওবা এই ঠোঙা ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু ঝালমুড়ি, সিঙারা ইত্যাদি যা তৈরি খাবার তা খবরের কাগজের ওপর রেখে খাওয়া একেবারেই অস্বাস্থ্যকর। মত ডঃ নন্দীর। তাঁর মতে এর থেকে টিউবারকিউলোসিস, টকসোপ্লাজমোসিস, টাইফয়েড, গ্যাসট্রোএন্টেরাইটিস, আমাশার মতো ভয়ঙ্কর রোগ হতে পারে অনায়াসেই।

তাহলে কী খবরের কাগজ পড়বেন না?

ভাইরোলজিস্ট ডঃ অমিতাভ নন্দীর পারমর্শ

১) খবরের কাগজ অবশ্যই পড়ুন। তবে খবরের কাগজ পড়ার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে ভুলবেন না। ব্যবহার করতে পারেন অ্যালকোহল বেসেড্ হ্যান্ড স্যানিটাইজারও।

২) খবরের কাগজ নিয়ে বিছানায় বা খাবার টেবিলে পড়বেন না।

৩) প্রেস থেকে প্যাকেটবন্দী করে সংবাদপত্র ভেন্ডারদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।

৪) খবরের কাগজের তৈরি ঠোঙায় তেরি খাবার বিক্রি করা বা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।এক্ষেত্রে শালপাতার ঠোঙা বা ব্রাউন পেপার ব্যবহার করা উপযুক্ত। যা পরিবেশবান্ধবও বটে এবং প্লাস্টিক বর্জনের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ।

Posted in: